শ্রেণিকক্ষে তালা মেরে দিঘড়ী দাখিল মাদ্রাসা
সুপারকে বর্জন করলো শিক্ষার্থীরা
যশোরের সমাজ নিউজ
যশোরের চৌগাছা দিঘড়ী দাখিল মাদ্রাসার সাময়িক বহিস্কৃত সুপার শাহনাজ পারভীন মাদ্রাসায় গেলে মাদ্রাসায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বাসায় চলে যায়। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে বিরুপ প্রভাব পড়েছে। বৃহস্পতিবার সুপার মাদ্রাসায় গেলে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, দিঘড়ী দাখিল মাদ্রাসার সুপার সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন। সম্প্রতিক মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ পার হয়ে গেলে সুপার জালিয়াতি করে একটি চিঠি করেন। যাকে সভাপতি করা হয় এলাকাবাসী কখনো তার নাম শোনেন নি। অবৈধ সভাপতি কে ব্যবহার করে সুপার তার বকেয়া সমুদয় বেতন বিল উত্তোলন করে নেন। সাময়কি বরখাস্তের আদেশেরও প্রত্যাহার করে নেন। যেটা সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূত। ফলে বৃহস্পতিবার সুপার মাদ্রাসায় গেলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বাসায় চলে যায়।
মাদ্রাসা শিক্ষক শাহিনুর রহমান বাবু বলেন, সাময়িক বহিস্কৃত সুপার শাহনাজ পারভীন মাদ্রাসায় আসলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে বাড়ি চলে যায়।’
শিক্ষক মাসুদুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে সুপার এর অবৈধ কার্যকলাপের প্রতিবাদ করেছে। এর জন্য সুপার নিজেই দায়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এস এম বজলুর রশিদ বলেন, ঘটনাটি সঠিক। সুপার মাদ্রাসায় গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে বর্জন করে। শ্রেণিকক্ষে তালা মেরে বাড়ি ফিরে যায়। বিষয়টি জানার পরে তিনি ওই মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন।’
উল্লেখ্য, সুপার শাহানাজ পারভীন মাদ্রাসায় যোগদানের পর নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েন। তিনি অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, লুটপাট, মাদ্রাসার বিভিন্ন ফান্ড থেকে অর্থ তসরুপ, সরকারের দেওয়া কম্পিউটার ল্যাব আত্মসাৎ, জালিয়াতি করে বিভিন্ন পদে নিয়োগ বানিজ্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে অসৌজন্য আচরণ, শিক্ষার্থীদের নিকট অতিরিক্ত ফি আদায় ও রাজনৈতিক দাপট প্রদর্শন করেন। তার এসব কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিষ্ঠানটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে।
এলাকাবাসী সুপার শাহানাজ পারভীনকে অপসারণের দাবিতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন ও বিভিন্ন বিক্ষোভ আয়োজন করেন। আন্দোলনের মুখে ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা তাকে বরখাস্ত করেন। এরপর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, যার প্রধান ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম মোহাম্মদ রফিকুজ্জামান এবং সদস্যরা ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মেহেদী হাসান ও উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান।